লাভজনক কিছু গ্রামীণ ব্যবসা আইডিয়া যা আপনি সহজেই শুরু করতে পারেন ২০২৩ এ

আমাদের দেশের বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে গ্রাম গড়ে উঠেছে এবং বেশিরভাগ গ্রাম গুলি শহর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। এখন গ্রামের মানুষ রাও স্বনির্ভর হতে চায় । শহরের মত গ্রামের মানুষ দের মধ্যে ও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়েছে। যাতায়াত ব্যাবস্থার অনুন্নতির জন্য গ্রাম থেকে শহরে এসে চাকরি করা সবসময় সম্ভব হয় না । বর্তমানে সরকারি ও প্রাইভেট দুই ধরনের চাকরিতেই প্রতিযোগিতা অনেক বেশি।


তাই কেউ যদি চায় নিজের স্বাধীন ভাবে ব্যাবসা করতে পারে । গ্রামের দিকে ছোট ব্যাবসা শুরু করার অনেক উপায় আছে এবং তাতে লাভবান হওয়ার ও অনেক সহজ । তাই আপনি যদি গ্রাম এ বাস করেন তাহলে আপনার জন্য সঠিক এই আর্টিকেল টি। আমরা কয়েকটি সহজতম আর্টিকেল এর আইডিয়া দিলাম।


আপনি হয়তো একটু কনফিউজড হয়ে পড়েছেন কি ব্যাবসা শুরু করবেন , বা কিভাবে করবেন ?? তাহলে পুরো আর্টিকেল টি পড়ে দেখুন আশা করছি আপনার কিছুটা হলেও পরিকল্পনা আসবে ……..

১। মেডিকেল স্টোর (Medical Store):

মেডিকেল স্টোর বা ওষুধের দোকান এমন একটা ব্যাবসা গ্রাম বা শহরে উভয় জায়গাতেই জনপ্রিয়। যেকোনো গ্রামীণ হসপিটাল এর পাশে এই মেডিকেল স্টোর টি হলে সুবিধা হয়। তবে মেডিকেল স্টোর টির লাইসেন্স জোগাড় করতে হবে।

আর যেসব ওষুধ লোকালিটি তে পাওয়া যায় সেগুলো শহর থেকে এনে দোকানে রাখতে হবে। কাস্টমার এর চাহিদা গুলি পূরণ করতে হবে । তাহলে এই ব্যাবসা খুব লাভজনক।

২। উচ্চফলনশীল বীজ ও সার এর দোকান:

গ্রামের মানুষ দের এখনো প্রধান জীবিকা গুলির একটি হল কৃষিকাজ । বছরে দুবার করে জমিতে ফসল ফলানো হয় । তাই ফসল গুলিকে পোকামাকড় এর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কীটনাশক ব্যাবহার করতেই হবে , এবং জমিতে ভালো ফলন এর জন্য সার ও দরকার পড়বে।


তাই আপনি যদি গ্রাম এ বাস করে থাকেন , চাইলেই গ্রাম এর বাজারে একটা সার এর দোকান খুলতে পারেন সেখানে উচ্চফলনশীল বীজ ও রাখতে পারেন । দোকান এর ভাড়া দেওয়া ও প্রোডাক্ট গুলি প্রথমে কিনতে যা খরচ পড়বে সেটা সময়ের সাথে সাথে বিক্রি বাড়লে কোনো সমস্যা হবে না । আপনি লাভ এর মুখ দেখবেন।

৩।ফাস্ট ফুড এর দোকান :

গ্রামের দিকে মানুষ বেশ ভোজনবিলাসী । এবার সেটি যদি হয় মুখরোচক কোনো খাবার তার চাহিদা খুব বেশি হয় । যেখানে মানুষের ভিড় বেশি, মোড়ের মাথায় বা বাজারে ফাস্ট ফুড এর একটা দোকান করে ফেলাই যায় । ব্যাবসার শুরুতে চাউমিন , এগরোল , মোমো এরকম কয়েকটি জনপ্রিয় রেসিপি নিয়ে শুরু করতে পারেন । আপনাকে কাছাকাছি মানুষ দের পছন্দ অপছন্দ কে খেয়াল রেখে বানাতে হবে ।
এই ব্যাবসার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বলতে একটি দোকান ভাড়া নিতে হবে , সহকর্মী দু একজন রাখলে ভালো হয় এই কয়েকটি জিনিস খেয়াল রাখলে বেশ ভালো একটি ব্যবসা পরিকল্পনা।

৪।মোবাইল রিপেয়ারিং এর দোকান :

যারা মোবাইল সম্পর্কে বেশ জানে বা মোবাইল সারানো এগুলি সম্পর্কে ছোটো কোনো কোর্স করেছে , তাদের জন্য খুব ভালো একটা অপশন।
জমজমাট বাজারের মধ্যে একটা দোকান ভাড়া নিয়ে , মোবাইল সংক্রান্ত জিনিসপত্র যেমন … হেডফোন , চার্জার ,রিচার্জ ভরা এগুলি যদি করা যায় , অনেক কাস্টমার আসবে। মোবাইল এখন মানুষের যোগাযোগ এর অন্যতম মাধ্যম । সবথেকে বহুল ব্যাবহৃত একটি জিনিস, তাই আপনি চাইলেই এই ব্যাবসা টি শুরু করতে পারেন। এই ব্যাবসার কোনো লোকসান নেই।

৫।দর্জির দোকান :

মানুষ এর প্রাথমিক চাহিদার মধ্যে পড়ে বস্ত্র । তাই দর্জি সব জায়গায় লাগে । গ্রামের দিকে মহিলারা বাড়িতে বসে একটি দর্জি মেশিন কিনে কাজ করতে পারে । সালোয়ার বানানো , সেলাই করা এই কাজ গুলোর চাহিদা খুব।
বাজারের মধ্যে একটি দোকান ভাড়া নিয়েও এই ব্যাবসা করা যায়। আপনার বিনিয়োগ বলতে একটি মেশিন কিনতে হবে এবং সেলাই করা সালোয়ার বানানো এগুলি শিখতে হবে । ব্যাবসা বাড়লে আপনি অনেক গুলি মেশিন কিনে অর্ডার বেশি নিতে পারবেন ।

৬।কম্পিউটার সেন্টার :

এখন গ্রামের দিকেও মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে , তারাও কম্পিউটার শিখতে চায় । কিন্তু প্রত্যেকের নিজস্ব বাড়িতে কম্পিউটার কেনা সম্ভব হয় না ।

তাই আপনি যদি কম্পিউটার শিখে থাকেন , তাহলে একটি কম্পিউটার সেন্টার বানাতে পারেন । একটি জায়গা ভাড়া করে , কয়েকটি কম্পিউটার কিনে শেখাতে শুরু করতে পারেন ।

গ্রামের দিকে অনেকেই উৎসাহী হয় কম্পিউটার শেখার জন্য। এর সাথে স্পোকেন ইংলিশ এর ক্লাস ও শুরু করতে পারেন ।

বর্তমানে এই ধরনের ব্যাবসা খুব চলছে। মানুষ সবরকম ভাবে নিজেকে ভালো কোনো জায়গায় পৌঁছানোর জন্য নিজেকে তৈরি করতে চায় ।

৭।সবজির পাইকারি বিসনেস :

গ্রাম্য এরিয়াতে বেশিরভাগ সবাই নিজের জমিতে , বাগানে সবজির চাষ করে থাকে । সেগুলোই শহরের দিকে খুব চাহিদা থাকে ।

আপনি সবজি চাষ না করলেও , কৃষকের বাড়ি থেকে সরাসরি ওই সবজি কিনে পাইকারি মার্কেটে সেল করতে পারেন না শহরে এসে নিজেও বিক্রি করতে পারেন।

আপনার যদি বিসনেস করার মত বুদ্ধি থাকে , পরিশ্রমী হন আপনার জন্য খুব ভালো আইডিয়া ।

৮। হস্ত শিল্পের ব্যাবসা :

নদিয়া , মুর্শিদাবাদ , বীরভূম , বাঁকুড়া , প্রভৃতি জেলায় হাতের তৈরি মাটির পুতুল , পোড়ামাটির জিনিস খুব বিখ্যাত । এরকম অনেকেই আছেন যারা নিজের হাতে উলের জিনিস , মাদুর , চাটাই বানায়।
অনেকে আবার ধূপকাঠি , মোমবাতি , মাটির পুতুল বানাতে পারে । তারা এই নিয়ে ব্যাবসা করতে পারে । মেলায় গিয়ে বিক্রি করতে পারে । ফেরি নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে বিক্রি করতে পারে । এগুলোর চাহিদা শহরের দিকেও আছে । গ্রাম থেকে শহরে গিয়ে বিক্রি করতে পারে।

৯। দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্যের ব্যাবসা :

সারা দেশে ডেয়ারী প্রোডাক্ট খুব বিখ্যাত । এই যে বিপুল পরিমাণ দুধের চাহিদা পূরণ হয় গ্রাম থেকেই । এখনও প্রতন্ত গ্রামের দিকে গবাদি পশু পালন করা হয় , সেখান থেকে পুরো দুধে তাই শহরে রপ্তানি করা যায় ।
তাই কেউ গ্রামে বাস করেন , এবং ভাবছেন কিভাবে বাজারে চাহিদা আছে এমন ব্যবসা শুরু করে পারেন।

তাদের জন্য ভালো উপায় একটা খাটাল তৈরি করে গবাদি পশু পালন করে ডেয়ারী ফার্ম তৈরি করা যায় । সেখান থেকে মিষ্টি দোকানে দুধ সাপ্লাই করা যায় । আপনার বিনিয়োগ বলতে , গ্রামের দিকে প্রত্যেকেরই খামার বাড়ি থাকে, তারা সেখানে গবাদি পশু রাখতে পারে । গরু গুলোকে দেখভাল করার জন্য ১-২ দুটো কর্মচারীর প্রয়োজন। ব্যাবসা টি শুরুর দিকে কিছু টাকা বিনিয়োগ করতে হবে কিন্তু ক্রমাগত টাকা ইনকাম এর পরিমাণ টা খুব বেশি ।

১০। জলের সাপ্লাই এর ব্যাবসা :

গ্রাম এ ব্যাবসা করার একটি ভালো দিক হল প্রতিযোগিতা কম । কাঁচামাল এর জোগান ও বেশি । তাই যেকোনো ব্যাবসা শুরু করতে কোনো সমস্যা থাকে না । গ্রামের দিকে অনেক সময় ভালো জল পাওয়া যায় না , তাই জলের সাপ্লাই এর ব্যাবসা করা যায় । গ্রামের একেবারে ভেতরের দিকে যেখানে ভালো জল পাওয়া যায় না সেখানে জল সাপ্লাই দেওয়া যায় । একটা গাড়ি ভাড়া করতে হবে এবং এই কাজের জন্য আপনাকে পরিশ্রমী হতে হবে।

১১। ফুলের চাষ :

গ্রামের দিকে সবারই বসবাসের জায়গার পাশে , ফাঁকা জায়গা থাকে । সেখানে ফুল এর গাছ বসিয়ে ব্যাবসা করা যায় । যেকোনো শহরাঞ্চলে ফুলের চাহিদা খুব বেশি । তবে আপনকে জানতে হবে কিভাবে ফুলের যত্ন নিতে হয় । আপনকে পরিশ্রমী হতে হবে । বাইরে থেকে ফুলের চারা আনতে হবে । আপনাকে আনকমন ফুলের সাপ্লাই দিতে হবে । আপনাকে কানেকশান বাড়াতে হবে , বাইরে যদি রপ্তানি করতে পারেন তাহলে আপনি লাখপতি হতে পারেন ।

১২। সাইবার ক্যাফে এর ব্যাবসা :

গ্রাম বা শহরে উভয় জায়গাতেই একটি সাইবার ক্যাফে খুব ভালো চলে । যেহেতু গ্রামের দিকে সবার বাড়িতে কম্পিউটার থাকে না তাই প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষা বা কলেজের কোনো ফর্ম ফিলাপ করার জন্য সাইবার এ আসতেই হয়।
এখন তো ব্যাংকিং যেকোনো কাজ , ইলেকট্রিক বিল সাবমিট করা , পঞ্চায়েত এর বিভিন্ন কাজ সাইবার এর মাধ্যমেই করা হয় । যদি আপনার কম্পিউটার সম্বন্ধে ভালো মত অভিজ্ঞতা থাকে ,অবশ্যই ঘন জনবসতি পূর্ণ এলাকায় একটা সাইবার খুলে বসলে বেশ কাস্টমার পাওয়া যাবে ।

১৩। ফুচকা দোকানঃ

ফুচকা নাম শুনলেই সকলের জিভ এ জল আসে। গ্রামের দিকে খুব জনপ্রিয় খাবার।
আপনি ফুচকার ব্যাবসা শুরু করতেই পারেন , যেকোনো জায়গায় চলবে । রাস্তার মোড়ে দোকান দিতে পারেন অথবা পাড়ায় পাড়ায় ফুচকা নিয়ে বিক্রি করতে পারেন । বিকেলের দিকে কোনো পার্ক এ গিয়ে বসতে পারেন । তবে আপনাকে কাস্টমার দের মন বুঝতে হবে , তারা কেমন ধরনের খুঁজছে সেরকম বানাতে হবে। এখন ফুচকার মধ্যেও অনেকে ভ্যারায়িটি খুঁজছে ,তাই আপনাকে ফ্লেভারের পরিবর্তন করতে হবে ।
এখন দই ফুচকা , ঘুগনি ফুচকা , চকলেট ফ্লেভারের ফুচকা এসব চলছে ভালো মত ।
ব্যাবসার শুরুতে ফুচকা বানানোর উপকরণ গুলোও কিনতে হবে, একটা গাড়ির ব্যাবস্থা করতে হবে । তবে এটি খুব লাভজনক ব্যাবসা ।
আপনার প্রোডাক্ট ভালো হলে কয়েকজন ধরাবাঁধা খদ্দের ও পেয়ে যাবেন ।

১৪। বেকারির ব্যাবসা :

ছোটো শহর বা গ্রামাঞ্চলে আজকাল বেকারী প্রোডাক্ট এর ব্যাবহার বেড়েছে। যেখানে লোকসমাগম বেশি বা বড়ো রাস্তার মাথায় একটা বেকারী শপ খুলে ফেলতে পারেন ।


এর ড্রাই প্রোডাক্ট গুলি অনেক দিন পর্যন্ত ভালো থাকে তাই ক্ষতি এর পরিমাণ বেশি হয় না । কোনো স্পেশাল অনুষ্ঠান গ্রামের মানুষ কে শহরে যেতে হতো বেকারী প্রোডাক্ট কিনতে । তাই আপনি চাইলেই বেকারী শপ খুলতে পারেন ।


শপ এ নিত্যনতুন ইউনিক প্রোডাক্ট তুলুন , তাহলে কাস্টমার বাড়বে , সেল বাড়বে , ব্যাবসার উন্নতি হবে । এই ব্যাবসা প্রথম দিকে বেশ অনেক টা টাকা বিনিয়োগ করতে হবে তবে একবার মানুষের ভালো লাগল , আপনার দোকানের রিভিউ ভালো হলে ব্যাবসার উন্নতি হবে আপনি ভালো ইনকাম করতে পারবেন । আপনি অর্ডার নিয়ে হোম ডেলিভারির ব্যাবস্থাও করতে পারেন ।

১৫। তেলেভাজার দোকান :

এখনো বাঙালির পাড়ার মোড়ে বসে আড্ডা দেওয়া প্রথা চলে আসছে । আপনারা যারা গ্রামে থাকেন ভাবছেন কোন ব্যাবসা টি শুরু করলে আপনি লাভবান হবেন। তাহলে বলে মোড়ের মাথায় একটা তেলেভাজার দোকান দিতেই পারেন। আড্ডা প্রেমী মানুষরা সন্ধ্যার দিকে তেলেভাজা দোকানে সবাই আড্ডা দিতে পছন্দ করে তার সাথে গরম গরম তেলেভাজা। তবে আপনাকে

তেলেভাজা গুলি বানাতে জানতে হবে তবেই কাস্টমার বাড়বে । তেলেভাজার সাথে গরম গরম চা এর ব্যাবসা ও খুলতে পারেন তাহলে ষোলোকলা পূর্ণ । এইসব দোকান গুলি গ্রামগঞ্জের দিকে খুব চলে । আপনি খুব অল্প টাকা বিনিয়োগ এই ব্যাবসা শুরু করতে পারেন । আপনি ঠকবেন না তবে ব্যাবসায়িক বুদ্ধি টা ভালো থাকা চাই।

১৬। জেরক্স প্রিন্ট আউট এর দোকান :

চাকরির ইন্টাভিউয়ে বার বার বার্থ হচ্ছেন তাহলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য অন্য কিছু ভাবুন । যদি গ্রামে বাড়ি হয় তাহলে একদম চাকরির পিছনে পড়ে থাকবেন না । চাকরির থেকে অনেক বেশি ইনকাম করতে পারবেন ব্যাবসা তে । শুধু একটু পরিশ্রম করার ক্ষমতা আর স্ট্রিট স্মার্ট হতে হবে আপনাকে ।

আপনি চাইলে কোনো স্কুল বা কলেজের পাশে একটা জেরক্স প্রিন্ট আউট এর দোকান খুলতে পারেন । প্রতি মুহূর্তে জেরক্স আমাদের কাজে লাগে । এখন স্কুল , কলেজের প্রজেক্ট এর পরিমাণ অনেক বেশি তাই আপনি যদি জেরক্স মেশিন এর সাথে একটি কম্পিউটার প্রিন্ট আউট এর মাশিন কিনে নেন তাহলে তো কথা নেই। এর সাথে ফ্রন্ট পেজ বানানো, স্পাইরাল বাইন্ডিং এগুলো জানা থাকলে আপনার দোকান এর চাহিদা অনেক বেশি হবে । এ ব্যাবসার কোনো মন্দা হয় না সারা বছর চলবে ।


আপনকে ব্যাবসার শুরুর দিকে অনেক টা টাকা ইনভেস্ট করতে হবে তবে । কিন্তু এখন ব্যাংক থেকে অনেক রকম লোন পাওয়া যায় । তাই চিন্তা না করে আপনি শুরু করতে পারেন। লাভবান ই হবেন ।

১৭। পরিবহন এর ব্যাবসা :

যারা ছোটো শহরে বাস করে তাদের বড়ো সমস্যা যাতায়াত ব্যাবস্থা । গ্রাম থেকে শহরে যেতে গেলে বা দূরবর্তী কোথাও যেতে গেলে সময় মতো গাড়ি পাওয়া যায় না গাড়ির সংখ্যা ও কম থাকে ।


তাই আপনারা যারা গ্রাম এ থাকেন এই সমস্যার কিনারা করতে পারেন এবং নিজে ব্যাবসা শুরু করতে পারেন । আপনি টোটো , ম্যাজিক কিনে এগুলো দিয়ে ভাড়া খাটা তে পারেন। গ্রামের দিকে এই যানবহন গুলো খুব জনপ্রিয় । এর মেইনটেন্যান্স খরচ ও খুব বেশি নয় । একটা ড্রাইভার স্যালারি সিস্টেমে রেখে দেবেন আপনার এই ব্যাবসা টি খুব লাভজনক হবে।

১৮। বই এর দোকান :

যদিও এখন অনলাইনে পড়াশোনায় মানুষ অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে । কিন্তু গ্রামের দিকে এখনো বই এর চাহিদা আছে । আপনি চাইলে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি কোথাও বই এর দোকান খুলতে পারেন । বই এর দোকানে চাকরির প্রস্তুতির বই , স্কুলের সিলেবাসের সহায়ক বই রাখতে পারেন । কোনো প্রাইভেট স্কুলের সাথে কন্টাক্ট নিয়ে তাদের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত বই তুলতে পারেন । আপনকে কাস্টমার এর চাহিদা মতো বই শহর থেকে এনে রাখতে হবে দোকান।
আপনার দোকান থেকে যদি চাহিদা মত বই রাখতে পারেন তাহলে আপনার খদ্দের বাড়বে ।
তাহলে লাভবান ও হবেন।

১৯। আচার বানানোর ব্যাবসা :

বহু বছর ধরে আচার বানানোর প্রথা চলে আসছে। বাড়ির মায়েরা সারাবছর ধরে কোনো না কোনো আচার বানাতে থাকে । সেগুলি স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় হয়। গ্রামের দিকে প্রায় সবারই আম কাঁঠাল এর গাছ থাকে।


বাড়ির বানানো আচার নিয়ে ব্যাবসা করতে পারেন । পাড়ায় পাড়ায় ঠেলা গাড়ি নিয়ে বিক্রি করতে পারেন বা কোনো বাজারে ও দোকান নিয়ে বসতে পারেন । এখন তো অনলাইন ওয়েবসাইট বানিয়ে আপনার ব্যাবসা টি জনপ্রিয় করতে পারেন।
খুব সহজ একটি ব্যাবসা , খুব বেশি অর্থ অনেক বিনিয়োগ করতে হবে না তাও আপনার আচার জনপ্রিয়তা লাভ করলে উন্নতির মুখ দেখবেন ।

গ্রামীণ ব্যবসা আইডিয়া এর অসুবিধা :

আপনাকে কম্পিটিটিভ হতে হবে । আপনার ব্যাবসার সমতুল্য অন্য দোকান গুলোর থেকে ইউনিক কিছু রাখতে হবে যাতে করে আপনার খদ্দের বাড়ে ।


যেকোন ব্যাবসা তে লাভ ক্ষতি দুটোই আছে সেগুলোর জন্য আপনকে তৈরি থাকতে হবে । কঠিন মনোবলের হতে হবে।

যেকোনো ব্যাবসা করার জন্য ব্যাবসায়িক মানসিকতার দরকার । আপনি যদি কর্মঠ না হন তাহলে আপনার ব্যাবসা চলবে না ।


আপনার কাস্টমার এর সাথে ব্যাবহার ভালো করতে হবে । অনেকে রাগী , মানুষের সাথে মিশে যেতে পারে না তখন ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

উপসংহারঃ


আর্টিকেলটি পড়ার পরে নিশ্চয়ই সহজলভ্য কয়েকটি ব্যবসা আইডিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনি যদি গ্রামে বাস করেন তাহলে শহরে প্রতিদিন যাতায়াত করে চাকুরী করা সত্যি অসুবিধাজনক, তাই অল্প পুঁজিতে এই ব্যবসা পরিকল্পনা গুলি বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করতে পারেন। আশা করছি আপনারা সফল ব্যবসায়ী রুপে শীঘ্রই প্রতিষ্ঠিত হবেন।



Leave a Comment